সহিংস হরতালের পাঁচ দিনের মাথায় ডাকা বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে হেফাজতে ইসলামের গাজীপুরের নেতা-কর্মীরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, সড়কে অবস্থান নিয়ে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে এই সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিপেটার পাশাপাশি রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করে।
এতে দুই পক্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। তবে সংখ্যাটি নিশ্চিত করে বলছে না কেউ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ করে হেফাজতের কর্মীরা।
গাজীপুর হেফাজতের বিক্ষোভ
গত রোববার হেফাজতের হরতালে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা করে হেফাজতের কর্মীরা। তবে কর্মসূচি চলাকালে তাদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে পর দিন দোয়া ও শুক্রবার বিক্ষোভের ডাক দেয় হেফাজত।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা আর সদর দপ্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজত কর্মীরা শান্ত থাকলেও গাজীপুরের নেতা-কর্মীরা আবার সহিংস হয়ে উঠে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা নিউজবাংলাকে জানান, হেফাজত কর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
‘একপর্যায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়’-বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
গাজীপুরে হেফাজতের বিক্ষোভে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ
সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
তবে হেফাজতে ইসলামের গাজীপুর জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন খান অভিযোগ করেছেন, তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, জুমার নামাজের পর মুসুল্লিরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ঈদগাহ ময়দানে বিক্ষোভের জন্য অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে অন্তত ১৫জন কর্মী আহত হয়েছেন।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে রাজপথে কর্মসূচি পালন করছে হেফাজতে ইসলাম।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বন্ধু দেশটির সরকার প্রধানের সফরকে কেন্দ্র করে ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা চালায় তারা। সেদিন পুলিশ গুলি চালালে পাঁচ জন নিহতের পর ২৮ মার্চ ডাকে হরতাল।
সেদিন দেশের নানাপ্রান্তে তাণ্ডব চালানো হয়। সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনার পাশাপাশি ভাঙচুর চলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নেও। গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হয় আক্রমণ।
তবে উল্টো তাদের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।